ঘি খাওয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘিতে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিকর উপাদান, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঘি খাওয়ার নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করা দরকার। সঠিক সময়ে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে খাঁটি ঘি খেলে সেরা ফল পাওয়া যাই। তবে অবশ্যই পরীক্ষা করে নিবেন ঘি বিশুদ্ধ কিনা।
Table of Contents
কেন আপনি খাঁটি ঘি খাবেন
১) খাঁটি ঘিতে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই, কে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, খনিজ লবণ ইত্যাদির।
২) ঘিতে থাকে কনজ্যুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৩) ঘিতে ক্ষতিকর তৈল থাকে না।
৪) রান্নাতে ঘি ব্যবহার খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়।
৫) ঘিতে থাকা সকল পুষ্টিকর উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
সুতরাং, ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উত্তম।
প্রতিদিন ঘি খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন সকাল এক চা চামচ ঘি খেলে আমাদের শরীররে অনেক লাভ হয়। যেমনঃ
- পাকস্থলীকে শক্তিশালী করে এবং খাদ্যের হজমক্ষমতা বাড়ায়।
- ভিটামিন, খনিজ লবণ ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান যোগায়
- ঘি খাওয়ায় হরমোনগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ইমিউন সিস্টেমও শক্তিশালী হয়।
- ঘিতে থাকা কনজ্যুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড (CLA) ওজন কমানোতে সাহায্য করে।
- ত্বক, চুল ও নখ স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
- ঘুমের মান উন্নত করে।
সুতরাং, ঘি খাওয়া আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ঘি খাওয়ার নিয়ম ও উপযুক্ত সময়
ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময় নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন সময়ে ঘি খাওয়া সবচেয়ে উপযুক্ত:
সকালে খালি পেটেঘি খেলে কি হয়:
সকালে খালি পেটে ঘি খাওয়া সবচেয়ে উত্তম। এক চা চামচ ঘি খেলে দিনটা ভালো কাটে। এটি পাকস্থলীকে শক্তিশালী করে এবং হজমক্ষমতা বাড়ায়।
বিকেলে ঘি খেলে কি হয়:
বিকেলে ঘি খাওয়া ঠিক নয়। এটি হজমে কষ্ট করে দেয়। তাই বিকেলে ঘির পরিবর্তে ফল, সবজি খান।
রাতে ঘি খেলে কি হয়:
রাতে হালকা খাবারের সাথে ঘি খেলে ভালো ঘুম আসে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি বেশি কার্যকরী।
ঘি খাওয়ার পূর্বে এই নিয়মগুলো মাথায় রাখা দরকার
ঘি খুবই উপকারী হলেও অত্যধিক পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। ঘিতে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই দিনে ১-২ চা চা-চামচার বেশি পরিমাণে ঘি খাওয়া উচিত নয়। আর খাবারের সাথে মিশিয়ে খেলে পারিশ্রমিক ক্যালরি কমানো যায়।
ওজন কমানোর চেষ্টায় থাকলে ঘি খাওয়া নিয়ে গবেষণায় একমত নেই। ঘিতে অনেক উচ্চ মাত্রায় ক্যালরি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকায় অত্যধিক পরিমাণ খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মাঝারি পরিমাণে ঘি খেলে অনেকের ক্ষেত্রে ওজন কমেছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
কারণ ঘিতে মেডিয়াম চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় শরীরে চর্বি পুষিয়ে দেয়। আবার খাদ্যের মাধ্যমে প্রাপ্ত ক্যালরির পরিমাণ কমে যায়। সংক্ষেপে, ওজন কমানোর চেষ্টায় থাকলেও সামান্য পরিমাণে ঘি খেলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে প্রতিদিন ১-২ চা চামচার বেশি খেলে চলবে না।
সুতরাং, সকাল ও রাতে পরিমাণ মত ঘি খেলে স্বাস্থ্য উন্নতিতে সহায়তা করে।
আমার নাম শাপলা সরকার, আমি একজন সার্টিফাইড নিউট্রিশনিস্ট। আমি গত ১০ বছর ধরে মানুষকে স্বাস্থ্যকর খাবার সেবন ও জীবনশৈলী অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছি। বিশেষ করে দেশী সুষম আহারগুলো সম্পর্কে আমার বিশেষ আগ্রহ ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করি আমার লেখা ও পরামর্শগুলো থেকে আপনারা উপকৃত হবেন।